

বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজ বা নিবন্ধিত বিবাহ (Registered Marriage) একটি আইনসম্মত পদ্ধতি, যার মাধ্যমে দুই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি আইনি স্বীকৃতি নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এটি সাধারণত যারা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ না করে সরাসরি আইনের আওতায় বিবাহ করতে চান, তাদের জন্য উপযোগী। তবে, বাস্তবতায় এই পদ্ধতিতে কিছু সুবিধা যেমন আছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
১. মুসলিম ব্যক্তিদের জন্য:
Muslim Marriage and Divorce Registration Act, 1974 অনুসারে কাজী অফিসে রেজিস্ট্রি করে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
এখানে মূলত নিকাহ পড়িয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের জন্য:
Special Marriage Act, 1872 বা নিজ নিজ ধর্মীয় আইনের আওতায় বিবাহ হতে পারে।
Special Marriage Act অনুযায়ী ধর্মনিরপেক্ষভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব।
বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিবাহ:
Special Marriage Act অনুযায়ী বিয়ের আবেদন দিয়ে ৩০ দিনের নোটিশের পর রেজিস্ট্রেশন সম্ভব।
আইনি স্বীকৃতি: স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাওয়া যায়।
স্বাধীনতা: ব্যক্তিরা নিজের ইচ্ছায় ধর্ম বা পরিবারগত চাপ ছাড়াই বিবাহ করতে পারেন।
প্রমাণ: ভবিষ্যতে বিবাহের প্রমাণ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট গুরুত্বপূর্ণ।
মালিকানা ও ওয়ারিশি অধিকার: আইনগতভাবে স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকার, সন্তানের বৈধতা ইত্যাদি নিশ্চিত হয়।
পারিবারিক ও সামাজিক চাপ: পরিবার থেকে অসম্মতি, মানসিক চাপ, এমনকি হুমকি পাওয়া যায়।
প্রশাসনিক জটিলতা: অনেক সময় রেজিস্ট্রি অফিস বা কর্তৃপক্ষ সহযোগিতায় গড়িমসি করে।
ধর্মীয় ও সামাজিক বিদ্বেষ: ভিন্ন ধর্মে বিয়ে হলে সামাজিকভাবে অপমান, অবজ্ঞা বা সহিংসতার শিকার হওয়া যায়।
নারীর ঝুঁকি: মেয়েদের ক্ষেত্রে কোর্ট ম্যারেজের পর সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও চাপ বেশি হয়।
উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ
পাসপোর্ট সাইজ ছবি
প্রাপ্তবয়স্কতা নিশ্চিত করার প্রমাণ
আগের বিবাহ হয়ে থাকলে ডিভোর্স বা মৃত্যু সনদ
৩০ দিনের নোটিশের কপি (Special Marriage Act-এর ক্ষেত্রে)
বাংলাদেশে কোর্ট ম্যারেজ একটি আইনি অধিকার হলেও বাস্তবতায় এটি সহজ নয়, বিশেষ করে সামাজিক ও পারিবারিক কারণে। তবে যারা সচেতন, আত্মনির্ভরশীল এবং নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল, তাদের জন্য এটি একটি কার্যকর মাধ্যম। প্রয়োজনে আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।